স্বাদ ও গন্ধের জন্য ইলিশ মাছের তুলনা নেই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু স্বাদে নয় এই মাছটি গুণেও অনন্য। ইলিশ মাছ নানাভাবে রান্না করা যায়। বর্ষায় ইলিশ ভাজা, ইলিশের ভর্তা, শর্ষে ইলিশ, ভাপা ইলিশ, ইলিশ পাতুরি, দই ইলিশ, পান্তা ইলিশ, ইলিশের ডিম ছাড়া যেন বাঙালির রসনায় তৃপ্তি আসে না। ইলিশ স্বাদে অতুলনীয় একটি মাছ।
এ তো গেল স্বাদের কথা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইলিশ পুষ্টিগুণেও ভরপুর। ১০০ গ্রাম ইলিশে প্রায় ২১দশমিক ৮ গ্রাম প্রোটিন থাকে। এছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, নায়সিন, ট্রিপ্টোফ্যান, ভিটামিন, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, খনিজ এসব উপাদান থাকে।। বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের কারণে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে ইলিশ।

এছাড়া ইলিশ সামুদ্রিক মাছ। অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের মতো ইলিশে সম্পৃক্ত চর্বি কম থাকে। এ কারণে হৃদরোগের জন্য এটি বেশ উপকারী।সেই সঙ্গে শরীরে রক্ত সঞ্চাললের জন্যও এটি কার্যকরী।ইলিশ মাছ বাংলাদেশের প্রিয় খাদ্য এবং এটি শুধু স্বাদের জন্য নয়, বরং এর পুষ্টি গুণের জন্যও অত্যন্ত জনপ্রিয়। এখানে ইলিশ মাছ খাওয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা তুলে ধরা হলো:
১. প্রোটিনের উৎকৃষ্ট উৎস
ইলিশ মাছ প্রোটিনের একটি দারুণ উৎস, যা আমাদের শরীরের মাংসপেশি গঠন এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এটি হালকা ও সহজে হজমযোগ্য প্রোটিন প্রদান করে।
২. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড
ইলিশ মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে পূর্ণ, যা হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এই ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা উন্নত করতে এবং মেমরি শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
৩. ভিটামিন ডি
ইলিশ মাছের মধ্যে প্রাকৃতিক ভিটামিন ডি রয়েছে, যা হাড়ের শক্তি এবং ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়ক। এটি হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪. স্বাস্থ্যকর চর্বি
ইলিশ মাছের মধ্যে থাকা স্বাস্থ্যকর চর্বি শরীরের প্রয়োজনীয় ফ্যাটের যোগান দেয় এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ত্বককে মসৃণ এবং উজ্জ্বল রাখতে সহায়ক।
৫. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
ইলিশ মাছের মধ্যে রয়েছে অনেক ধরনের খনিজ পদার্থ, যেমন সেলেনিয়াম, যা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
৬. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
ইলিশ মাছের কম ক্যালোরি এবং উচ্চ প্রোটিনের পরিমাণ খাদ্যতালিকায় যুক্ত হলে এটি ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি পেট ভর্তি রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমায়।
৭. ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী
ইলিশ মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন E ত্বককে মসৃণ এবং নরম রাখে, এবং চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে।
উপসংহার:
ইলিশ মাছ শুধু সুস্বাদু নয়, বরং এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ইলিশ মাছ অন্তর্ভুক্ত করলে আপনি বিভিন্ন ধরনের শারীরিক উপকারিতা পাবেন, যা দীর্ঘমেয়াদে আপনার স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করবে।
এটি আপনার স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিতে এক সেরা পদক্ষেপ হতে পারে।